আনসারুল্লাহ বাংলা টীম পরিবেশিত
আল-কায়েদা এরাবিয়ান পেনিনসুলার বিবৃতির একটি বাংলা অনুবাদ
بسم الله الرحمن الرحيم
সকল প্রশংসা আল্লাহ্র যিনি সমস্ত কিছুর মালিক। শান্তি এবং অনুগ্রহ বর্ষিত হোক আমাদের নবী মুহাম্মদ ও তাঁর পরিবার পরিজনের প্রতি।
শুরুঃ
আমরা আমাদের মুজাহিদ উম্মাহকে বীর মুজাহিদ শাইখ আবু আব্দুর-রহমান আনোয়ার বিন নাসির আল-আওলাকি এর শহীদ হওয়ার ঘোষনা দিচ্ছি যিনি উম্মাহকে অবিচারের বিরুদ্ধে জাগিয়ে তুলেছিলেন।
তাঁর সাথে আরো শহীদ হয়েছেন তাঁর সাথী আবু মুহসিন আল-মারিবি, সামির খান এবং সালিম আল-মারওয়ানি (তাঁদের সকলের উপর আল্লাহ্র অনুগ্রহ বর্ষিত হোক)। তাঁরা সকলে শহীদ হয়েছেন মারিব এবং জাওয়াফের মধ্যে আমেরিকান বিমান আক্রমণের ফলে।
আল্লাহ্র অনুগ্রহে ইসলামের দাওয়াহ প্রচারকারী এই শাইখ নিহত হয়েছেন যখন তিনি দাওয়াহ এবং জিহাদকে দৃঢ়ভাবে ধরেছেন, যখন স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক চাপ তাঁকে এই দাওয়াহ প্রচার করা থেকে বিরত করতে পারেনি। এর জন্য তাঁকে অনেক হুমকি এবং ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছিল, তাঁকে বন্দী এবং নির্যাতন করা হয়েছিল।
এই ইসলামিক দা’য়ী হচ্ছে সেই একজন যিনি তাঁর বিশ্বাসের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করেছিলেন। তিনি সত্যের বিজয়ের উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে গিয়েছিলেন। এইটি মুসলিম উম্মাহর চরিত্র যে তাঁদের নেতারা বিছানায় শুয়ে মৃত্যুবরন করে না। মুসলিম উম্মাহর জন্য এইটি সম্মানের বিষয় ও বিজয়ের চিহ্ন যে তাঁদের নেতা এবং দা’য়ীরা শহীদ হয়েছেন।
যেকোন সত্যের আহবান অথবা যেকোন জাতি কি ত্যাগ ব্যাতিত বেঁচে ছিল? যদি না হয় তাহলে আমরা একটি উম্মাহ যারা কখনও মৃত্যুবরন করবো না! অধিকন্তু এইটি হচ্ছে বিজয়, জীবন এবং একটি মুক্তি কারন মৃত্যু এইটিকে একটি জীবন দেয়।
আমেরিকা ইসলামের দা’য়ী শাইখ আনোয়ার আল-আওলাকি এবং সামির খানকে প্রমাণ ছাড়াই তাঁদেরকে অভিযুক্ত করে গোপণে তাঁদের হত্যা করেছে এবং তারা তাদের স্বাধীণ নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা অনুযায়ী এর কোন প্রমান দেখাতে পারেনি।
কোথায় তাঁদের স্বাধীনতার, ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকারের আহবানকারীরা এবং স্বাধীনতা যা তারা দাবি করে? আমেরিকা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল তাদের মাধ্যমে যারা তাদের নিজস্ব নিয়মনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল যা তারা সবসময় করে এবং যার উপর ভিত্তি করে তাদের দেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে তারা দাবি করে।
আমেরিকা তাদের নিয়মনীতিগুলো মেনে না নেওয়ার মতই একটি ব্যর্থ দেশ, যখন শাইখ বিজয়ী হওয়ার প্রমান দিয়েছেন, তিনি জীবিত ছিলেন তাঁর বিশ্বাস অনুযায়ী এবং মারাও গিয়েছিলেন তাঁর বিশ্বাস অনুযায়ী।
এবং এইভাবে আমেরিকা তাঁর বিচার বহির্ভূত আগ্রাসন, হত্যার মত কাজগুলো সম্পাদন করে থাকে প্রতিদিন। অবশ্যই এই ধরনের অপরাধমূলক কাজ করার জন্য তাদের কালো অধ্যায় মূলক সুদীর্ঘ একটি ইতিহাস আছে। তারা জনসম্মুখে মিথ্যা কথা বলায় খুবই পারদর্শী এবং দাবি করে যে তাঁরা হচ্ছে মানবাধিকার, স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচারের রক্ষক।
তাদের মিথ্যুক প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে একটি বক্তৃতা দিয়েছিল এবং বলেছিল শাইখ আনোয়ার আল-আওলাকির মৃত্যু হচ্ছে ইয়েমেনের জনগণের বিজয় কারন তার মতে শাইখ ইয়েমেনের অনেক জনগণকে হত্যা করেছে। কিন্তু ওবামা যে তাঁর ধর্মকে প্রতিদিন পরিবর্তন করে স্বীকার করেছে যে ইয়েমেনের কসাই আলি সালেহর সহযোগীতায় এবং অনুগ্রহে সে মাযলাহ এবং রাফাদায় শাইখের শত শত উপজাতীয় অনুসারীদের হত্যা করেছে যাদের অধিকাংশই নারী, শিশু এবং বৃদ্ধা।
আল্লাহ্র ইচ্ছায় শাইখ এখণ চিরস্থায়ী আবাসস্থল জান্নাতের জীবন শুরু করেছেন, যখন উম্মাহকে তিনি একটি পরিষ্কার এবং বিশুদ্ধ আদর্শের উপর রেখে গিয়েছেন একটি স্বাতন্ত্র্য পদ্ধতির উপর, এবং উম্মাহ দাওয়াহ এবং জিহাদের একটি পদ্ধতি গ্রহন করেছে যা তাদেরকে নিয়ে গিয়েছিল বিজয় এবং সম্মানের দিকে।
হ্যাঁ আমেরিকা শাইখ আনোয়ারকে (আল্লাহ্ তাঁর উপর অনুগ্রহ করুন) হত্যা করেছে কিন্তু তারা কখনও তাঁর আদর্শকে হত্যা করতে পারবে না। অধিকন্তু শাইখের এই শাহাদাত উম্মাহকে তাঁর আদর্শ এবং পদ্ধতির একটি নতুন এবং পুনর্জাগরিত জীবন দিয়েছে।
শাইখের অনেক ছাত্র আছে যারা তাঁর থেকে শিক্ষা নিয়েছে, যারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁর থেকে উপকার পেয়েছে। তাঁরা তাঁর অভিযান অব্যাহত রাখবে, তাঁর পদাঙ্ককে অনুসরণ করছে, অবিরত চলছে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দেখানো সোজা পথে।
আমেরিকার রাজনীতিবিদদের জন্য আমেরিকার জনগণ এতে অভ্যস্থ যে যখনই তারা ইসলামের কোন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিকে হত্যা করে অথবা যখনই ইসলামের কোন বীর নায়ক শাহাদাত বরন করে, তখন তারা অনেক কিছু কল্পনা করতে শুরু করে যে তারা ইসলামকে অথবা মুসলিম উম্মাহকে ধ্বংস করে ফেলেছে, তারা মনে করে যে মুসলিম উম্মাহ এখন দূর্বল অথবা ঐদিন তারা এইসব মুসলিমকে হত্যা করে বীরের বিজয় অর্জন করেছে।
প্রকৃতপক্ষে এইটা তাদের অলীক কল্পনা বৈকি! কারন তারা লড়াই করছে একটি পুরো জাতি এবং একটি অসাধারন জাতির বিরুদ্ধে। তারা লড়াই করছে তাওহিদে বিশ্বাসী এবং জিহাদি জাতির সাথে। কি করে পৃথিবীতে তারা এর বিরতি টানার চিন্তা করতে পারে?!
এই ধরনের বেমানান কৌশল এবং সাথে সাথে সারা পৃথিবীতে আমেরিকার জুলুম নির্যাতন, ইহুদি এবং নীপিড়ক তাগুতদেরকে আমেরিকার বিরতিহীন সাহায্য সহযোগীতা, সেই সাথে বিভিন্ন অঞ্চলে আমেরিকার তাবেদারদের কারণে মুসলিম জনতা বিদ্রোহী হয়ে মাঠে নামতে বাধ্য হয়েছে। আমেরিকার তাগুতি নীতির বিরোধীতা, তাদের সারা পৃথিবীতে জুলুম নির্যাতন এবং তাবেদার শাসকদেরকে সমর্থনকে সামনে রেখে এই বিদ্রোহ। এই শাসকদেরকে আমেরিকা তাদের ঘারে চাপিয়ে দিয়েছে।
আল্লাহ্র সাহায্যে আমেরিকা মিশরেই একটি চপেটাঘাত খেয়েছে যখন বিপ্লবীরা আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে দেখা করতে অস্বীকার করেছিল, এরপর তারা জিহাদের ভূমি লিবিয়াতে আরেক চপেটাঘাত খেয়েছিল।
এখন তারা শুধু সিরিয়ার মুসলিম জনগণের দিকে তাকিয়ে আছে, ইয়েমেনের গণজাগরনের ব্যাপারে তারা কিছু করতে অপারগ কারন তাঁরা আমেরিকার উদ্দেশ্যকে নিন্দা জানাচ্ছে এবং আমেরিকার নাক গলানোকে অস্বীকার করছে। সকল কিছুই হচ্ছে বিরোধী দলকে বাদ দিয়ে। আল্লাহ্র অনুগ্রহে যারা বেশিরভাগ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না , না তাদের কোন শক্ত ভিত্তি আছে।
আমাদের ইয়েমেনের বিপ্লবীরা! নিশ্চয় আপনারা আপনাদের ঘর ত্যাগ করেছেন মুক্তি, ন্যায়বিচারের খোঁজে এবং আমেরিকার নাক গলানোর বিরুদ্ধে। আপনাদের শক্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে এই সব লজ্জাজনক কাপুরোষচিত বিমান (ড্রোন) হামলার বিরুদ্ধে। এই ধরনের অবিরত আক্রমণগুলো আপনাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাচ্ছে সেই সাথে অসহায় শিশু, নারী এবং বৃদ্ধদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। আপনাদের মুখ খুলতে হবে তাদের বিরুদ্ধে যারা আমেরিকার দ্বারা নির্বাচিত, যেভাবে আপনারা করেছিলেন দালাল আলি সালেহর বিরুদ্ধে। আল্লাহ্র কসম তারা একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। আমাদের বিপদ আপদ আমেরিকা আর তাবেদারদের ছাড়া অন্য কারো জন্য????!!
আলি আব্দুল্লাহ সালহ আল্লাহ্র পাশাপাশি আমেরিকাকে তার রব হিসেবে নিয়েছে। এইটা তারাই করেছে যারা সালেহকে বৈধতা দিয়েছে , তাকে সমর্থন দিয়েছে এবং তার পাশে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০ বছর ধরে!!!
আমাদের ইয়েমেনের বিপ্লবীরা! অবশ্যই আপনাদেরকে আমেরিকার দাসত্ব থেকে নিজেদের মুক্ত করতে হবে, এই অঞ্চলের জন্য আমেরিকার পরিকল্পনাকে প্রত্যাখান করতে হবে এবং আমেরিকার জুলুম নির্যাতনের সম্মুখীন আমাদের ইরাক,আফগানিস্তান এবং ফিলিস্তিনের ভাইদের সাহায্য সহযোগীতা করাও আপনাদের বিদ্রোহের উদ্দেশ্য হতে হবে।
আমাদের ইয়েমেনের বিপ্লবীরা! আপনারা তাবেদার আলি আব্দুল্লাহ সালেহর পতন ঘটিয়েছিলেন, এখন আপনাদেরকে আরেকটি পতন ঘটাতে হবে তা হচ্ছে এই অঞ্চলে আমেরিকার নাক গলানো।
পরিশেষে বলতে চাই, হে আওলাকির গোত্র আমরা আশা করি আল্লাহ্ আমাদের ও আপনাদেরকে সান্ত্বনা দান করুন আপনাদের পুত্র হত্যার কারণে এবং গৌরবান্বিত, সাহসী, শ্রেষ্ঠ, বীরোচিত শাইখ আনোয়ার বিন নাসির আল আওলাকি এর অন্যায়ভাবে হত্যা করার কারণে।
যখন মাত্র কিছুদিন পূর্বে মুজাহিদ শাইখ মুহাম্মদ বিন উমায়ের আল-কালাওয়ী আল-আওলাকিকে অসংখ্য নারী, শিশু এবং বৃদ্ধ সহ হত্যা করা হয়েছিল। আলি আব্দুল্লাহ সালেহর সরকার মুজাহিদ শাইখ জাঈদ আদ-দাগহারকে হত্যা করেছিল, এইটা একটা সুস্পষ্ট লক্ষন যে এই বিপ্লবী মুক্ত গোত্রকে টার্গেট করা হচ্ছে কারন তাঁরা অত্যাচার, জুলুম, অন্যায়কে মানতে রাজি না।
হে মুক্ত চেতা গোত্র!!! নিশ্চয় শাইখ এবং তাঁর সঙ্গীদের রক্ত বৃথা যাবে না! নিশ্চয় তার পিছনে অনেক বীর যোদ্ধা আছে যারা অন্যায় জুলুমের বিরুদ্ধে তাদের চোখ বন্ধ রাখবে না এবং শীঘ্রই ইনশাআল্লাহ্ তাঁরা প্রতিশোধ গ্রহণ করবে!
আওলাকির গোত্রকে বলছি যে সেরা সান্ত্বনা পুরুষ্কার হচ্ছে এইটি একটি গৌরবের বস্তু যা চাপা দেওয়া সম্ভব না।
আমরা আমেরিকার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত, তাঁরা আমাদের সাথে ক্ষতি করছে আমরাও তাদের ক্ষতি করছি, এবং শেষ বিজয় তাদেরই যারা ধৈর্য্য সহকারে থাকতে পারবে এবং তাঁরাই বিজয়ীরূপে আবির্ভূত হবে শেষ পর্যন্ত।
.
وَيَقُولُونَ مَتَىٰ هُوَ قُلْ عَسَىٰ أَن يَكُونَ قَرِيبًا
“এবং তারা বলে, ‘এটা কবে হবে?’ বলুনঃ হবে, সম্ভবতঃ শ্রীঘ্রই”
আল-কায়েদা এরাবিয়ান পেনিনসুলা
জুল-ক্বাদাহ ১১,১৪৩২
উৎসঃ আল-ফজর মিডিয়া সেন্টার
http://www.mediafire.com/file/fxvkcor1hvv73oi/shohider+rokto.docx
[উল্লেখ্য ফাতাওয়ার মূল পিডিএফ কপিটি আমাদের সংরক্ষণে নেই।]